আশপাশের লোকজনের ফেলা ময়লা আর্বজনা আর কচুরিপানার স্তুপ থেকে মুক্ত হয়ে বিনোদন স্পষ্টে রুপান্তরিত হয়েছে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা পরিষদের সরকারি পুকুর। অব্যবস্হাপনা আর পরিচর্যার অভাবে দীর্ঘদিন ধরে কচুরিপানায় ভরা ছিল সুবিশাল আকৃতির এই পুকুরটি। উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স ভবনের পিছন থেকে দক্ষিণ দিকে কোটালীপাড়া শেখ লুৎফর রহমান আদর্শ সরকারি কলেজের পুকুর পর্যন্ত প্রায় ৫০০ মিটার লম্বা পুকুরটি ফিরেছে এখন চিরচেনা রুপে।পুকুরের পুর্বপাড়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স উপজেলা চেয়ারম্যানের বাস ভবন,উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বাস ভবন ও উপজেলা প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তাদের কোয়ার্টার এবং পস্চিমপাড়ে উপজেলা নির্বাচন সার্ভার স্টেশন, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস,উপজেলা মডেল মসজিদ, উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ও ডরমেটরি থাকায় পুকুরটির গুরুত্ব বহন করে অনেক।কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে কচুরিপানায় ভরা থাকার কারণে মশা উৎপত্তির কেন্দ্র স্থল হয়ে উঠেছিল পুকুরটি। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য উদ্যোগ গ্রহন করে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাসুম বিল্লাহ এর প্রশাসন এবং প্রকল্প হাতে নিয়ে পুকুরের পশ্চিমপাড়ের সড়ক সংস্কারের কাজ পুকুরের কচুরিপানা অপসারণ পানি পরিস্কার ও পুকুরের পাড়ে বসার জন্য সারি সারি টুল বসিয়ে সৌন্দর্য বর্ধনের নির্মান কাজের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান।সংস্কারের পর বর্তমানে পুকুরটি দৃষ্টিনন্দন হয়ে সেজেছে অপরুপ সাজে।পাশাপাশি শিশুদের বিনোদনের জন্য নামানো হয়েছে চারটি প্যাডেল বোট।
এবং দুর্ঘটনার ঝুঁকি এড়াতে প্রতিটি বোটেই রাখা হয়েছে লাইফ জ্যাকেট।দর্শনার্থীদের ভীড় বাড়ছে পুকুর পাড়ে।বিকেল বেলা টুলে বসে পুকুরের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসেন নানা বয়সের মানুষ।চলতি মাসের (৫ অক্টোবর)দুপুরে প্রধান অতিথি হিসেবে লেকের সৌন্দর্যবর্ধন কার্যক্রম ও প্যাডেল বোট উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাগুফতা হক, এসময় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো: মাসুম বিল্লাহ সহ উপজেলা প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।এদিকে দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে পুকুরের চারপাশে ফুটওয়াক রাখা হয়েছে,যাতে মানুষ নির্বিঘ্নে হাঁটতে গিয়ে চর্তুদিকের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন। মঙ্গলবার (২৮অক্টোবর) পুকুর পারে গিয়ে বোট মালিক মোঃ মিরাজের কাছে জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন মোটামুটি ভাবে চলছে কারণ এখন পর্যন্ত অনেক মানুষ জানেনা যে বিনোদনের জন্য এখানে এতো সুন্দর পরিবেশ হয়েছে ।বোটে পুকুরের উত্তরপাড় থেকে দক্ষিণপাড় পর্যন্ত যেতে ৫ মিনিট সময় লাগে।
বর্তমানে বোটে ঘুরতে জনপ্রতি ২০ মিনিট ৩০ টাকা করে নিচ্ছি। আগামীতে আরো ভালো হবে বলে আশা করি।উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাগুফতা হক বলেন,পুকুরটি দীর্ঘদিন ধরে ময়লা আর্বজনা আর কচুরিপানায় ভরা ছিল সেই কচুরিপানা অপসারণ করে নতুনভাবে সাজানো হয়েছে আশা করছি এটি কোটালীপাড়াবাসীর জন্য একটি বিনোদন স্পট হিসেবে পরিচিতি পাবে। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় লেকের চারিপাশে লাইট এবং সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হবে। আপাতত এক ব্যক্তিকে বোড চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তিনি লেকের পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করাসহ রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য জনসাধারণের কাছ থেকে নামমাত্র শুভেচ্ছা মুল্য হিসেবে প্যাডেল বোট পরিচালনা করছেন।উপজেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগ কেবল লেকের সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনেনি,বরং এটি স্থানীয় জনগণের মাঝে বিনোদনের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে বলে মতামত প্রকাশ করেছেন স্হানীয় জনতা।
Leave a Reply