ফরিদপুর-৪ আসন বিন্যাসের প্রতিবাদে ফরিদপুরের ভাঙ্গায় বিক্ষোভ-অবরোধ শনিবার পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। ফরিদপুর জেলা প্রশাসকের অনুরোধে আন্দোলনকারীদের পক্ষে উপজেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার ইকবাল হোসেন সেলিম এ ঘোষণা দেন। মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে ভাঙ্গা কেন্দ্রীয় ঈদগাহ জামে মসজিদের সামনে আয়োজিত এক শান্তিপূর্ণ মিছিল শেষে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। এর পর থেকে মহাসড়কের যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে যায়। তবে জনগণের নিরাপত্তা স্বার্থে বিভিন্ন মহাসড়কের পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল জোরদার করেছেন।
এর আগে সকাল থেকে মহাসড়কে ম্যাজিস্ট্রেটসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল পরিমাণ র্যাব বিজিবি, পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। তবে এলাকার পরিবেশ থমথমে ভাব বিরাজ করছে।
সোমবার দুটি থানা ও উপজেলা পরিষদ ভাঙচুরের পর নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। সোমবার রাতে ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি মো. রেজাউল করিম মল্লিকসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভাঙ্গা থানা পরিদর্শন করেন। রাত ১২টার দিকে এক প্রেস ব্রিফিং করেন ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি মো. রেজাউল করিম মল্লিক।
পরে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান মোল্যা বলেন, ভাঙ্গার মানুষ শান্তিপ্রিয় মানুষ। আমি তাদের অবরোধ তুলে নেয়ার জন্য অনুরোধ করছি। নির্বাচন কমিশনকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। আশা করছি জনগণের স্বার্থে জনগণের দাবি মেনে নেবে। তাছাড়া আগামী ২১ তারিখে হাইকোর্টে একটি রিট রয়েছে। আদালত কী সিদ্ধান্ত দিবে সেই অপেক্ষা করছি।
প্রসঙ্গত, গত ৪ আগস্ট নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত গেজেটে সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসে ফরিদপুর-৪ আসনের ভাঙ্গার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নকে পার্শ্ববর্তী ফরিদপুর-২ আসনে সংযুক্ত করা হয়। এরপরই তিন দফায় গত ৫ দিন ভাঙ্গা হয়ে যাওয়া দুটি মহাসড়ক, দুটি রেলপথ ও ঢাকা-মাওয়া ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ করা হয়। এতে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েন দক্ষিণবঙ্গের ২১ জেলার মানুষ।
গত শনিবার তিন দিনের সকাল সন্ধ্যা অবরোধের ঘোষণা দেওয়া হয়। পরে ঘোষণাকারী সর্বদলীয় ঐক্য পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক ও আলগী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ম ম সিদ্দিক মিয়াকে আটক করে ডিবি পুলিশ। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নের অপরাধে রোববার রাতে ৯০ জনের নামে ভাঙ্গা থানায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা হয়।
গত সোমবার দুপুরে বিক্ষুব্ধরা ২টি থানা, উপজেলা পরিষদ, নির্বাচন অফিস, হাইওয়ে থানা, ট্রাফিক বক্সসহ পৌরসভায় হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় বিক্ষুব্ধরা। পরে পুলিশ ১টি গাড়ি ৫টি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় এবং ভাঙচুর করা হয় পুলিশের আরও ১২টি গাড়ি ও ১০-১২টি মোটরসাইকেল।
এ ঘটনার ছবি ও ভিডিও ধারণ করতে গেলে সাংবাদিকদের বাধা দেওয়াসহ হামলায় কয়েকজন সাংবাদিক ও পুলিশ হামলায় আহত হয়।
Leave a Reply