শারদীয় দুর্গাপূজার বিজয় দশমী শেষ হবার ৫ দিনের মাথায় অনুষ্ঠিত হয় লক্ষ্মীর পূজা। মাদারীপুরের একটি গ্রামে ধন সম্পদের দেবির এই পুজাকে ঘিরে স্থায়ী-অস্থায়ী অর্ধশত মন্ডপ সাজানো হয়েছে বর্ণিল আলোকসজ্জায়। উৎসবকে ঘিরে মন্ডপগুলাতে রাতভর চলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। হাজারো ভক্ত ও দর্শনার্থীর আগমনে মুখর পুরো এলাকা। তিনদিনের অনুষ্ঠান শান্তিপূর্ণ করতে ব্যাপক নিরাপত্তার কথা জানায় পুলিশ।

সরেজমিনে দেখা যায়, শঙ্খ আর উলু ধ্বনি, তার সাথে ঢাকের শব্দ। ধন সম্পদ প্রাপ্তির আশা আর সংসারে সুখ বৃদ্ধিতে লক্ষ্মী দেবির আরধনায় মগ্ন ভক্তবৃন্দ। অনুষ্ঠান দেখতে জড়ো হয় বিভিন্ন বয়সের মানু। সবকিছু মিলিয়ে এক উৎসবের আমেজ। কোজাগরি পূর্ণিমায় প্রতিবছর এই দিনে মাদারীপুরের ডাসার উপজেলায় নবগ্রামে শুরু হয় বিষ্ণু পত্মী লক্ষ্মী দেবির পূজা। পূজাকে ঘিরে সন্ধ্যা থেকে রাতভর মন্ডপগুলোতে চলে নৃত্য, সংগীত, নাটক, কবিতা আবৃত্তিসহ নানা আয়োজন। মনমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখতে শুধু মাদারীপুর জেলার মানুষই নন, ছুটে আসেন পাশের গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, বরিশাল ও শরিয়তপুরের দর্শনার্থীরাও। অনুষ্ঠান দেখে মুখরিত শিশু-কিশোরসহ হাজারো দর্শক। এলাকার সুনাম দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিয়ে এই আয়োজন বলে জানান আয়োজকরা। আগামীতে বৃহৎ পরিকল্পনার কথাও জানান তারা।

জানা যায়, সোমবারের শুরু হওয়া তিনদিনে এই অনুষ্ঠান বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকের প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শেষ হবে। কয়েক যুগ ধধেন সম্পদের দেবি শ্রী শ্রী লক্ষ্মী পূজাকে ঘিরে নবগ্রামের বিভিন্ন এলাকা সাজানো হয় বর্ণিল আলোকসজ্জায়।
নারায়নগঞ্জ থেকে আসা শিক্ষার্র্থী অর্পিতা দেবনাথ বলেন, ‘একসাথে কয়েক হাজার মানুষ অনুষ্ঠান দেখার মজাই আলাদা। এ যেন এক মিলন মেলা। মুগ্ধতা পায় সবাই।’
গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়া উপজেলার ঘাঘরবাজারের ব্যবসায়ী সুমন মিয়া বলেন, ‘প্রতিবছর নবগ্রামে লক্ষ্মী পূজা দেখতে আসি। এটি খুবই বড় আকারে হয়ে থাকে। তাই বন্ধুদের সাথে অনুষ্ঠান দেখে আনন্দ পাই।’
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার চুমুরদি এলাকা থেকে আসা গৌতম পাল বলেন, ‘পরিবারের সবাইকে নিয়ে এই অনুষ্ঠান দেখতে আসছি। এখানে আমার এক আত্মীয়ের বাড়ি। তাই তিন থেকে চারদিন বেড়ানো হয়, আর পূজার অনুষ্ঠানও দেখা হয়। সবাই মিলে মজা করি।’
সরকারবাড়ি লক্ষ্মী পূজার আয়োজক নৃপেন বৈদ্য বলেন, নবগ্রামে যে কয়টি পূজা হয় এরমধ্যে পুলিনবিহারীর বাড়ি অর্থাৎ সরকারবাড়িতে বেশ বড় আকারে এই অনুষ্ঠান হয়। এটি দেখতে আশপাশের কয়েকটি জেলা থেকে কয়েক হাজার দর্শক জড়ো হয়। দর্শকদের সার্বিক দিক বিবেচনা করে অনুষ্ঠান বৃহৎ আকারে করা হচ্ছে। আগামীতে নতুন চমকও থাকবে। যাতে দর্শক-¯্রােতারা আনন্দিত হয়।
মাদারীপুরের ডাসার থানার উপপরিদর্শক সুবির সূত্রধর জানান, নবগ্রামে উৎসবমুখর পরিবেশ লক্ষ্মী পূজা হয়ে থাকে। তাই থানা পুলিশ বিশেষ নিরাপত্তা প্রদান করছে। পূজা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে পর্যাপ্ত পুলিশ কাজ করছে।
Leave a Reply