বরগুনার তালতলী উপজেলায় দুই শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়েরের আট দিন পর আসামি মো. মোকলেছ মোল্লা (৫৯) কে আত্মগোপনে থাকাকালীন সময় পটুয়াখালী র্যাব-৮ গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারের পর আসামি মোকলেছ মোল্লাকে তালতলী থানা পুলিশের নিকট সোপর্দ করেছে র্যাব।
তালতলী পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, তালতলী থানার দুটি ধর্ষণ মামলার আসামী মোখলেস মোল্লাকে গ্রেপ্তার করতে একাধিক অভিযান পরিচালনা করা হয়। তদন্ত কর্মকর্তা গোপন সূত্র ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিশ্চিত হয় আসামি বেতাগী উপজেলায় অবস্থান করছে। তাকে নিশ্চিত ভাবে গ্রেপ্তার করতে তদন্ত কর্মকর্তা র্যার-৮ পটুয়াখালীর কাছে সহায়তা প্রদান করে। র্যাব-৮ পটুয়াখালী একটি দল উচ্চতর তথ্য প্রযুক্তি ডিভাইস ব্যবহার করে বেতাগী থেকে গ্রেপ্তার করে তালতলী থানা পুলিশের নিকট সোপর্দ করে।
এবিষয়ে তালতলী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শাহজালাল বলেন, আসামী মোখলেস মোল্লার বিরুদ্ধে দুই শিশুকে ধর্ষণ করার অভিযোগে দুটি মামলা দায়ের হয় তালতলী থানায়। মামলা রুজু হওয়ার পর থেকেই তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান পরিচালনা করা হয়। আসামী মামলার পরপরই গা-ঢাকা দিয়ে আত্মগোপনে চলে যায়। পরে তাকে র্যাব-৮ এর সহয়তায় গত ২৯ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার করা হয়। আসামী মোখলেস মোল্লাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়ছে। মামলার তদন্তের স্বার্থে ও ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে আদালতের নিকট রিমান্ড আবেদন করা হবে।
উল্লেখ্য, বরগুনার তালতলীতে বৃদ্ধার বিকৃত লালসার শিকারে যৌন নিপীড়ন হয়েছে দুই শিশু। গত ২১ অক্টোবর তালতলী থানায় দুইটি পৃথক ধর্ষণ ঘটনায় মোকলেছ মোল্লাকে প্রধান অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করেছেন দুই শিশুর অভিভাবক। অভিযোগে বলা হয়, অভিযুক্ত মোকলেছ মোল্লা টাকার ও খাবারের প্রলোভন দেখিয়ে শিশুদের নিজ ঘরে ডেকে নিয়ে গিয়ে পাশবিক নির্যাতন চালায়।
প্রথম ঘটনাটি ঘটে গত ৪ অক্টোবর দুপুরে। বৃদ্ধ মোকলেছ মোল্লা একটি শিশুকে ঘরে ডেকে নিয়ে বারান্দার খাটে শুইয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। শিশুটি চিৎকার দিলে তার মুখ চেপে ধরে ঐ মোকলেছ মোল্লা। পরে শিশুটি সেখান থেকে পালিয়ে বাড়িতে ফিরে আসলেও ভয়ে কিছুই জানায়নি পরিবারকে। শিশুটি যখন তীব্র ব্যথায় কষ্ট পেতে থাকে, তখন তার আচরণ দেখে বিষয়টি পরিবারের নজরে আসে। দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে গত ৬ অক্টোবর বিকেলে বেলায়। ঐদিন অভিযুক্ত মোকলেছ তার প্রতিবেশীর বাড়িতে প্রবেশ করে। ঘরে এসময় ৯ বছরের এক শিশু ছাড়া কেউ ছিলনা। এমন সুযোগ পেয়ে শিশুটির মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করে ঐ মোকলেছ। পরে শারীরিক যন্ত্রণায় কাঁদতে থাকলে ঘটনাটি প্রকাশ পায় পরিবারের কাছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ মোকলেছ মোল্লা দীর্ঘদিন ধরে এলাকার ছোট ছোট মেয়েদের টাকার ও খাবারের প্রলোভন দেখিয়ে কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। তার লম্পট চরিত্র নিয়ে এলাকাজুড়ে অসন্তোষ থাকলেও কেউ সাহস করে মুখ খোলেনি।
Leave a Reply