ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে জীবনধারার পরিবর্তন ও খাদ্যাভ্যাসে শৃঙ্খলা অপরিহার্য। তবে প্রকৃতিরও রয়েছে কিছু সহজ উপহার। এর মধ্যে অন্যতম হলো মেথি বা মেথি বীজ, যা খুবই পরিচিত। মেথি বীজে থাকা উচ্চমাত্রার ফাইবার হজম প্রক্রিয়া ধীর করে রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। শুধু তাই নয়, ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য মেথির পানি হতে পারে কার্যকর এক প্রাকৃতিক প্রতিকার।
মেথির উপকারিতা
১. ইনসুলিনের সংবেদনশীলতা বাড়ায়
শরীরের কোষগুলো ইনসুলিনের প্রতি কতটা কার্যকরভাবে সাড়া দিচ্ছে, তা নির্ভর করে ইনসুলিন সংবেদনশীলতার ওপর। সংবেদনশীলতা কম হলে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে থাকে। মেথির বীজ সাধারণত ইনসুলিনের কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করে। নিয়মিত মেথি খেলে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের ইনসুলিন নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।
২. রক্তে শর্করার পরিমাণ স্থিতিশীল রাখে
মেথি বীজ দ্রবণীয় ফাইবারে সমৃদ্ধ। এটি পাকস্থলীর খাবার খালি করার প্রক্রিয়া ধীর করে দেয়, ফলে কার্বোহাইড্রেট ও চিনি ধীরে ধীরে শোষিত হয়। পরে রক্তে শর্করায় স্থিতিশীলতা আসে। প্রতিদিন ১০ গ্রাম মেথি বীজ গরম পানিতে ভিজিয়ে খেলে টাইপ-২ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আসে।
৩. গ্লুকোজ শোষণ কমায়
মেথির বীজ অন্ত্রে গ্লুকোজ শোষণ কমাতে সক্ষম। এর ফলে হাইপারগ্লাইসেমিয়ার রক্তে উচ্চ শর্করার ঝুঁকি হ্রাস পায় এবং টাইপ-১ ও টাইপ-২ ডায়াবেটিস উভয়ের ক্ষেত্রেই উন্নত ব্যবস্থাপনা সম্ভব হয়।
ডায়াবেটিস রোগীরা কীভাবে খাবেন মেথি?
প্রতিদিন প্রায় ১০ গ্রাম মেথি বীজ নিয়মিত সেবন করলে দীর্ঘমেয়াদে রক্তে শর্করা ও উল্লেখযোগ্যভাবে কমতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, ৪-৬ মাস ধরে নিয়মিত মেথি বীজ খাওয়া ডায়াবেটিসের ঝুঁকি অনেকটা কমিয়ে আনে।
করণীয়:
রাতে ১ চা চামচ মেথি বীজ এক কাপ পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে সেই পানি পান করা।
সতর্কতা:
যদিও মেথি প্রাকৃতিক ও নিরাপদ, তবে যাদের রক্তে শর্করা কমে যাওয়ার ঝুঁকি আছে বা যারা ডায়াবেটিসের ওষুধ খাচ্ছেন, তাদের অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এটি খাদ্যতালিকায় যুক্ত করা উচিত।
Leave a Reply