মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চরম জনবল সংকট রয়েছে। যে কারনে সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা বিভিন্ন ধরনের রোগীরা। কালকিনি ও ডাসার উপজেলার প্রায় পাঁচ লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবার জন্য নির্মিত এই হাসপাতাল। এই দুই উপজেলার সাধারন জনগনের সেবাদানের একমাত্র প্রতিষ্ঠানে জনবল সংকটের কারনে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে এর দ্রুত সমাধান দেখতে চান সেবা বঞ্চিত রোগীরা ও স্থানীয় সচেতন মহল। এদিকে এই দুই উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে নির্মিত ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র গুলোতেও রয়েছে জনবল সংকট। অপরদিকে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অনেক সরকারি দপ্তরের সেবার মান পরিবর্তন হলেও চিকিৎসা সেবার মান রয়েছে আগের মতোই। সব মিলিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবার নাজুক অবস্থা। এখানে চিকিৎসার মান এবং পরিস্কার পরিছন্নতা নিয়েও রয়েছে নানান প্রশ্ন। আজ বুধবার সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালে কালকিনি উপজেলাস্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। কিন্তু উন্নত করনের ১৪ বছর পার হলেও বাড়তি অবকাঠামোর জন্য কোনো জনবল নিয়োগ দেয়া হয়নি। এর মধ্যে প্রথম শ্রেনী, ২য় শ্রেনী, ৩য় শ্রেনী ও ৪র্থ শ্রেনীসহ মোট প্রায় ৮০টি পদ শুন্য রয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছেন। তবে এখানে যে সকল ডাক্তারদের পদায়ন করা হয়েছে তাদের মধ্যে অনেক চিকিৎসককে সংযুক্তি দেয়া হয়েছে মাদারীপুর সদরসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে। এতে করে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের। নিরুপায় হয়ে এসব দরিদ্র মানুষদের চিকিৎসা নিতে পাঠানো হচ্ছে বরিশাল ও ঢাকা মেডিকেলে। এদিকে এই দুই উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে নির্মিত ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র গুলোতেও রয়েছে জনবল সংকট। সব মিলিয়ে এখানের চিকিৎসা সেবার নাজুক অবস্থা। অপরদিকে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে দ্রুত চিকিৎসক ও কর্মচারী সংকট সমাধানের দাবি সেবা বঞ্চিত রোগীদের ও স্থানীয় সচেতন মহলের।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে শিশু সন্তান নিয়ে এসেছিলেন রেশমা বেগম। তিনি বলেন, এখানে ভালো কোনো শিশু চিকিৎসক নেই। তাই বাচ্চাকে নিয়ে সমস্যায় পড়েছি। এখন ছেলের চিকিৎসার জন্য পাশ্ববর্তী বরিশালে যেতে হবে যা একদিকে ব্যয়বহুল অন্যদিকে নিয়ে যেতে অনেক সময়েরও প্রয়োজন।
স্থানীয় আকবর, সুলতান ও সাইদুলসহ বেশ কয়েকজন সচেতন ব্যক্তি বলেন, দুই উপজেলার সাধারন জনগনের সেবাদানের একমাত্র প্রতিষ্ঠানে জনবল সংকটের কারনে চিকিৎসা দিতে পারছেন না ডাক্তাররা। তাই আমরা এর দ্রুত সমাধান দেখতে চাই। তবে একদিকে এখানের চিকিৎসা সেবার অবস্থা নাজুক অপরদিকে পরিস্কার পরিছন্নতার মানও অনেকটা ভালো নয়। সব মিলেয়ে মনে হয় এ হাসপাতালটিও বর্তমানে একটি রোগী হয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার এস.কে শিবলী রহমান বলেন, আমাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র গুলোসহ প্রায় ৮০টি পদে জনবল শূন্য রয়েছে। যে কারনে এখানের চিকিৎসাসেবা ও পরিস্কার পরিছন্নতা নিয়ে নানান প্রশ্ন উঠেছে। তবে আমরা এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে তালিকা পাঠিয়েছি।
Leave a Reply